জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ২০ বছর আগে পূর্বশত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ ভাইসহ ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাট আদালতের সিনিয়র দায়রা জজ মো. নূর ইসলাম এ রায় দেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হরেন্দা গ্রামের মৃত বিরাজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে ছানোয়ার হোসেন, সাহাজ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও রিয়াজ উদ্দিন, একই গ্রামের নিভরসা ওরফে শুকটার ছেলে আব্দুল মান্নান, খয়বর আলীর ছেলে রমজান আলী, আব্দুল ওহাব, সামছুদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন, মৃত হাতেম আলীর ছেলে দুলো, আব্দুল খালেক, মৃত অফির উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান, মৃত মজিবর রহমানের ছেলে শফিকুল ইসলাম ও আব্দুল খালেকের ছেলে আনিছুর রহমান। রায় প্রদানের সময় আব্দুল মান্নান ছাড়া বাকিরা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ৫ মে পাঁচবিবি উপজেলার হরেন্দা গ্রামের মাঠে পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করতে যান ভোলা মন্ডল। এ সময় চালক ছাড়াও ভোলা মণ্ডলের আরও তিন ভাই উপস্থিত ছিলেন। ওইদিন রাত দেড়টার দিকে জমির পাশে চার ভাই শ্যালো মেশিনের পাশে বিছানা করে শুয়ে পড়েন। আর চালক পাওয়ার টিলার চালাচ্ছিলেন। হঠাৎ জমিতে কাদার মধ্যে হাঁটার শব্দ পান তারা। এ সময় তারা তাদের কাছে থাকা টর্চলাইট জ্বালিয়ে দেখতে পান, মুখ চেনা কয়েকজন ব্যক্তি পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে এসে ঘিরে ফেলে হামলা চালায়। একপর্যায়ে ভোলা মণ্ডলকে তারা কুপিয়ে জখম করেন।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ভোলাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচবিবির মহীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই দোলা মন্ডল বাদী হয়ে ৬ নভেম্বর পাঁচবিবি থানায় আসামিদের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি তদন্ত করেন তৎকালীন উপপরিদর্শক আব্দুস সাত্তার। তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৩ সালের ২ নভেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে নারাজি হলে পুনরায় তদন্ত শেষে ২০০৪ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক আজ এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: