পাঁচবারের মতো বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। এরই মধ্যে তিনি মনোনয়নপত্রও কিনেছেন। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলা নিয়ে কিশোরগঞ্জ-২। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ। তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন। এবার কিশোরগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগের ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আখতারুজ্জামানের মনোনয়নপত্র নেওয়ার বিষয়টি আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলের নেতা-কর্মীদেরই ভাবাচ্ছে।
মনোনয়নপত্র কেনার বিষয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, কটিয়াদী নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপি যদি নির্বাচনে যায়, তাহলে বিএনপির প্রার্থী হিসেবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। একটু এগিয়ে থাকার জন্য আগেভাগে মনোনয়নপত্র কিনেছেন বলে দাবি তাঁর। মনোনয়নপত্র কেনার বিষয়টি কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, আখতারুজ্জামান কটিয়াদীর বাসিন্দা। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। একসময় জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে টানা দুবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন। তখন আসনটি কেবল কটিয়াদী উপজেলা নিয়েই ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, আখতারুজ্জামান স্পষ্টবাদী মানুষ। বেফাঁস কথাবার্তা বলা ছাড়া দলে অন্য কোনো রকম বদনাম ছিল না। রাজনীতিতে তাঁকে রহস্যজনক নেতা মনে করা হয়। কখন তিনি দলে ফেরেন, আবার কখন বহিষ্কৃত হন, তা বোঝা কঠিন। পঞ্চমবার যেহেতু বহিষ্কৃত হয়েছেন, সুতরাং আবার দলে ফিরবেন না, এমন কথাও বলা যায় না। আর কিশোরগঞ্জ-২–এর সাবেক সংসদ সদস্য তিনি। ফলে তাঁর এলাকায় প্রভাব রয়েছে।
দলের কর্মীরা বলেন, আখতারুজ্জামান প্রথম বহিষ্কৃত হন ১৯৯৬ সালে। সেই সময় জাতীয় সংসদের একটি অধিবেশন থেকে বিএনপি ওয়াকআউট করে। সেদিন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে সংসদে থেকে যান। এর কিছুদিন পরই দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। দ্বিতীয়বার বহিষ্কৃত হন তত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে। তখন বিএনপি এই সরকার পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছিল। সেই সময় তিনি টিভি টক শোতে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জনগণের। বিএনপির উচিত ওই দাবি মেনে নেওয়া।
তারেক রহমানকে ‘বেয়াদব’ বলে তৃতীয়বার বহিষ্কৃত হন। আর চতুর্থবার বহিষ্কৃত হন দলীয় জ্যেষ্ঠ নেতাদের সমালোচনা করে। সর্বশেষ তাঁকে বহিষ্কার করা হয় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে দলীয় নেতাদের ব্যর্থতার বিষয়টি সামনে এনে।
আরও পড়ুন: