ঝিনাইদহে পাড়া-মহল্লায় গ্রামে-গঞ্জে সুদখোরদের দৌরাত্ম্য চরমে। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের শহীদুল ইসলামের ছেলে ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সুরুজ চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি লিখেছেন- ‘সুদখোররা টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদের দিয়ে দেবেন।’ শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সুরুজ সৌদি আরবে দীর্ঘদিন শ্রমিকের কাজ করেছেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে স্থানীয় হলিধানী বাজারে একটি কনফেকশনারির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। তিনি দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠান। এ সময় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা। দোকান ছেড়ে দেন। সুদের টাকার জন্য তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল এলাকার সুদখোরেরা। ঘটনার দিন জনৈক সুদখোর ফোন করেন তাকে। এতে ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে শ্বশুর মৃত আলি আহমদের বাড়ির দুইতলায় ফ্যানের রডের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
সুরুজের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ওই চিরকুটে তিনি লিখেছেন, ‘সুধখোরদের অত্যাচারে বাঁচতে পারলাম না, আমার জায়গা-জমি বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। একেকজনের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া- তার সাত-আট-দশগুণ টাকা দিয়েও রেহাই দিল না তারা। কেউ কেস করেছেন কেউ অপমান-অপদস্ত করেছেন, আমি আর সহ্য করতে পারছি না- তাই বিদায় নিলাম। আমার জানাজা হবে কিনা জানি না। যদি হয়- তখন সব সুদখোররা টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদের দিয়ে দেবেন। সুদখোরদের বিচার আল্লাহ করবে। সুদখোরদের নাম বললাম না কিন্তু তারা সবাই টাকার জন্য আসবে। তখন বুঝতে পারবেন তারা কারা। আমি ক্ষমার অযোগ্য, তবু ক্ষমা করে দেবেন।’
সুরুজের স্ত্রী সবুরা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী সুদখোরদের অত্যাচারে এবং তাদের চাপে আত্মহত্যা করেছেন, আমি এর বিচার চাই।’
সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।
আরও পড়ুন: