নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমকে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন সেনবাগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক। এ সংক্রান্ত দুই মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সেনবাগের ছমির মুন্সির হাটে এক মতবিনিময় চলাকালীন এ বক্তব্য ও হুমকি দেন।
এসময় জাহাঙ্গীর আলম মানিক বলেন, আমি একজন প্রার্থী ছিলাম এবং আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ভাইও প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমাদের কাউকে নৌকা না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আগের জন মোরশেদ আলমকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তারপর আমরা নেত্রীর নির্দেশে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে আমার মনোনয়ন বৈধ হয়েছিলো। আমি আমার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি এবং আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ভাইকে (কাঁচি প্রতীক) সমর্থন দিয়েছি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোরশেদ আলমকে উদ্দেশ্য করে জাহাঙ্গীর আলম মানিক আরও বলেন, আমরা রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে ফেলব আপনাকে। আজ আমরা সেনবাগের আওয়ামী লীগ ঐক্য। বাড়ি ফেরা না পর্যন্ত আমরা ঐক্য। আমাদের বিজয় আমরা সুনিশ্চিত করব। আজকে সময় এসেছে ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার। সুতরাং আপনাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। যদি কেউ ব্যালটে হাত দিতে আসে তাহলে তার জবাব হবে বুলেটের মাধ্যমে। আমরা যদি শুধু টাকার উপর নির্ভরশীল থাকি তাহলে আমাদের নেতাকে (আতাউর রহমান ভূঁইয়া) জেতাতে পারবে না।
এ বিষয়ে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে ঢাকা এজকে নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম।
তিনি বলেন, লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমি হলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং শেখ হাসিনার নৌকার প্রার্থী। আমার সাধারণ সম্পাদক নৌকার জন্য কাজ না করে স্বতন্ত্রের জন্য কাজ করছে। সে আমাকে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ লিখব। আমি নৌকার মনোনীত প্রার্থী, নৌকা জয় যুক্ত হলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন। দেশ যেভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, আগামীতেও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নোয়াখালী-২ আসনে মানুষ খাল কেটে কুমির আনবে না। আমি বিগত ১০ বছর যে উন্নয়ন করে দিয়েছি তা যেন আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে থেমে না যায়। আমি কোথাও সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির মতো ঘটনা হতে দেইনি। আমার আমলে কোনো প্রকার রাজনৈতিক সংঘাত-সহিংসতা, হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটেনি। এদিক থেকে সেনবাগ ছিল শান্তির আবাসস্থল।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলম (নৌকা), স্বতন্ত্র মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া (কাঁচি), জাসদের নাইমুল আহসান (মশাল), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রবিউল হোসাইন (ছড়ি), জাতীয় পার্টির তালেবুজ্জামান (লাঙ্গল) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কাজী সরওয়ার আলম (হাতঘড়ি)। এই আসনে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৪৯টি এবং মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৬৪ জন।
আরও পড়ুন: