দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে সমঝোতার কারণে এ আসনে নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় আওয়ামী লীগ। এরপরই কিশোরগঞ্জে জাতীয় পার্টির মহাসচিবের আসন নিয়ে শুরু হয়েছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। তাছাড়া পোস্টার বিতর্কের পর আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিবের আসনে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়ে নেতাকর্মীরা মাঠ গরম করে রাখছে।
আওয়ামী লীগ কর্মীদের ‘মূর্খ’ বলার প্রতিক্রিয়ায় এবার জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে ‘রাতের ভোটের রেফারি’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূঁইয়া বললেন, আসুন খেলা হবে। শেখ হাসিনা এবার বলে দিয়েছেন, একটা ব্যালটে যদি কেউ টাচ করে, একটা বুলেট ব্যবহার করা হবে। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে করিমগঞ্জ উপজেলার ঝাউতলা বাজারে নির্বাচনী পথসভা করছিলেন গোলাম কবির ভূঁইয়া। ওই সভায় বক্তৃতায় চুন্নুকে উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন। মুজিবুল হক চুন্নু এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করছেন।
গোলাম কবির ভূঁইয়ার বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে, মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, তিনি সুস্থ থাকলে এরকম বক্তব্য দিতেন না। তিনি কী বলতে চেয়েছেন, এটা কি বুঝে বলেছেন? সারাদেশে কে রাতে ভোট করেছিল এটা তার জানা উচিত ছিল। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে চাই না।
পথসভায় ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূঁইয়া বলেন, তাড়াইল করিমগঞ্জের মানুষের ওপর চুন্নুর বিশ্বাস নেই। তার বিশ্বাস রাতের ভোটের ওপর। এ সময় তিনি আরও বলেন, এবারও খালি মাঠে খেলতে চান? ২০১৮ সালের মতো রাতের রেফারি হতে চান? পুলিশ আর দফাদারকে দিয়ে রেফারিগিরি করতে চান?
এবার কিন্তু রেফারি তাড়াইল করিমগঞ্জের জনগণ। বাঁশিও তাদের হাতে, কার্ডও তাদের হাতে। তারা এবার কার্ড দেখাইয়া দেবে। সময় আসতেছে ৭ তারিখ। দাবি একটাই আপনার কাছে, ভেলকি তো অনেক দেখাইলেন, সাত তারিখের আগে আর কোনো ভেলকি দেখাইয়েন না। মাঠে থাইকেন- দেখতাম চাই, পায়ের জোর কতটুকু আছে, আর খেলার জোর কতটুকু আছে।
এছাড়া তিনি বলেন, এ আসনে চুন্নুর জনমত নেই। তিনি জাতীয় পার্টির কয়েকটা মানুষ নিয়ে ঘুরতেছেন। কালকে একটা মিটিং হইছে, চেয়ার দিছে ছয়শ, মানুষ হইছে দুইশ। গাড়ি একটা লইয়া বাইর হইছে হোন্ডা হইছে বিশটা। এই মানুষটি লইয়া এইনো হেইনো যাইতাছে। আপনারা যে কোনোখানে যাইবেন, এই রাস্তাও আপনাদের খোলা নাই। এবার খেলা হবে।
কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে গোলাম কবির ভূঁইয়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মাঠে আছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে তিনি কেটলি প্রতীক পেয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক গোলাম কবির শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে একাধিকবার তিনি বিদেশেও সফর করেছেন। সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে তিনি জাতিসঙ্ঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনে তিনি চুন্নুর অন্যতম শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী।
এ আসনে আওয়ামী লীগের আরও দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। তারা হলেন নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুল হক (ঈগল) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক এডিসি মেজর (অব.) নাসিমুল হক (কাঁচি)। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাপার সাথে সমঝোতার কারণে এ আসনে নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় আওয়ামী লীগ। মুজিবুল হক চুন্নু এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করছেন। রোববার রাতে চুন্নু জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নিয়ে করিমগঞ্জ উপজেলা সদরের মোরগ মহল এলাকায় নির্বাচনী পথসভা করেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগের আরও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। তারা হলেন, নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজুল হক (ঈগল) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক এডিসি মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক (কাঁচি)।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার কারণে এ আসনে নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় আওয়ামী লীগ।
আরও পড়ুন: