শেরপুর সদর থেকে একটানা ২৫ বছরের সরকার দলীয় নৌকা প্রতীকের এমপি আতিউর রহমান আতিককে চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচিত স্বতন্ত্র এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন ছানু নির্বাচনোত্তর বিশাল সংবর্ধনায় হাজার হাজার জনগণের সাথে ওয়াদা করে বলেছেন, আজ থেকে আমি আপনাদের কামলা (কাজের লোক)। আপনারা আমাকে এমপি নয়, কামলার দায়িত্ব দিয়েছেন।
এমপি ছানু বলেন, বিশ্বস্ততার সাথে মালিকের স্বার্থ রক্ষা করাই এখন আমার চ্যালেঞ্জ। আপনারা আমার মালিক। মালিকদের সন্তুষ্ট করতে না পারলে আগামীতে আমাকে আর কামলা রাখবেন না। আমি আপনাদের নিযুক্ত ও অনুগত কাজের বিশ্বস্ত সেবক হয়ে আজ থেকেই কাজ শুরু করলাম। আপনারা আমাকে দূরে সরিয়ে দিবেন না। ভুল হলে সংশোধন করে দিবেন।
হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকের সংবর্ধনায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় ফিরেই এই ওয়াদা করেছেন ছানু। তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ (সদর) আসন থেকে নিজ দলের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিককে ৪৫ হাজার ভোটে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দুই দিন পর ঢাকায় শপথ নিতে চলে যান এবং শপথ নিয়ে ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ-নকলা হয়ে শেরপুরে প্রবেশ করেন ছানু।
নতুন এই এমপির শেরপুরে ফেরার খবরে দুপুর থেকেই অসংখ্য নেতাকর্মী হাজারও মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস নিয়ে ময়মনসিংহ চায়না ব্রীজ ও নকলায় জমায়েত হতে শুরু করে। রাত আটটার দিকে এমপি শেরপুর শহরে আসেন। সাথে ছিলেন একান্তজন শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন করিব রুমান, উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাবিব চেয়ারম্যানসহ বেশ কিছু সফরসঙ্গী। নকলা থেকে শেরপুর, এই ১৯ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে শেরপুর শহরে আসতে সময় লাগে অন্তত চার ঘণ্টা। পথে অন্তত ৩০টি পথ-সংবর্ধনায় অংশ নিতে হয় এই নেতাকে। সন্ধ্যার দিকে সংবর্ধনার মহামিলন হয় শেরপুর দারগ আলী পৌর পার্কে।
এই মহামিলনের সংবর্ধনায় শেখ হাসিনার আগামি স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প ও নিজের ওয়াদার কথা ব্যক্ত করেন এমপি ছানু। শেরপুরের উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করবেন বলে জানান। তিনি শেরপুরকে সন্ত্রাস, নেশা ও চাঁদাবাজমুক্ত শান্তির একটি জেলা শহর গড়বেন বলে সবার সহযোগিতা চান । চাঁদাবাজি এখন থেকে একদম বন্ধ ঘোষণা করে গত দিনে যেখানে যেখানে অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে তা আইনগতভাবে দেখে ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কেউ অতি উৎসাহী হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা চেয়ারম্যান, পৌর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগ নেতা এড. ফেরদৌস, এড. সুব্রত কুমার দে ভানু, মহিলা আওয়ামীগ সভাপতি সামছ নাহার কামাল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: