গাজীপুরের বোর্ড বাজার হারিকেন রোড রশিদ মার্কেট এলাকায় বেস্ট একশন সিকিউরিটি কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান অভিযান চালিয়ে নারী-পুরুষসহ প্রতারণা ও জিম্মি চক্রের ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার (২০ মার্চ) রাতে র্যাব-১-এর একটি দল অভিযান চালিয়ে শারীরিক ও পাশবিকভাবে নির্যাতন করে বিপুল অংকের মুক্তিপণ দাবির সঙ্গে জড়িত সিকিউরিটি কোম্পানির প্রতারক চক্রের ১৪ জনকে আটক করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ভিজিটিং কার্ড, ভর্তি ফরমের প্যাড, চাকরি প্রত্যাশীদের পূরণকৃত ভর্তি ফরম ও আয়-ব্যয়ের রেজিস্টার জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আস্তাকুল আমিন আনাম (৩০), মো. তৌফিক (২৪), মো. ইমরান হোসেন (১৯), মো. জুনায়েদ (২১), মো. রনি আহমেদ (২১), সালাউদ্দিন সরকার (২০), মো. জিসান হোসেন (২১), মো. রায়হান (১৮), মো. আতিক হাসান (১৯), আজিজুল হাকিম (২৩), সম্পা আক্তার (২৪), মোছা. বিউটি খাতুন (২১), বর্ষা খাতুন (১৯) ও তাহসিন আক্তার মীম (২০)।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত স্বীকার করেন। তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি বিভিন্ন সময়ে বেস্ট এ্যাকশন সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠান এবং তাদের ব্যবহৃত মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে ভুয়া চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। এর মাধ্যমে তারা বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। চক্রটি প্রায় ৩ মাস ধরে এই প্রতারণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। চক্রটির মোট সদস্য সংখ্যা ২০ জন এবং চক্রটির মূলহোতা ৫ জন। চক্রের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন এলাকার চাকরিপ্রত্যাশীদের অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এই চক্রের মূলহোতাদের নিকট নিয়ে আসত। পরে তারা চাকরিপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এমনকি আটক করে রেখে তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিপুল অংকের নগদ অর্থ হাতিয়ে নিত।
র্যাব আরও জানায়, প্রতারক চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে অসংখ্য ব্যক্তির থেকে প্রায় কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া আত্মগোপনের জন্য তারা প্রায়শই নিজেদের মোবাইল নম্বর বন্ধ রেখে নিকট আত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবের বাসায় অবস্থান করত। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার সাকিব ও ফারজানা আক্তার ওই কোম্পানিতে চাকরির জন্য আসলে চক্রের সদস্যরা তাদেরকে প্রথমে আটকে রেখে গাজীপুরের একটি অজ্ঞাত বাড়িতে নিয়ে যায় এবং ভুক্তভোগীর পরিবারে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: