ঢাকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪ 

শেরপুর-ময়মনসিংহ বিকল্প মহাসড়ক হবে যোগাযোগ উন্নয়নের নতুন দুয়ার

মাসুদ হাসান বাদল

প্রকাশিত: ১৯:০৯, ১৯ মে ২০২৪

শেয়ার

শেরপুর-ময়মনসিংহ বিকল্প মহাসড়ক হবে যোগাযোগ উন্নয়নের নতুন দুয়ার

শেরপুরের উপশহর কানাশাখোলা থেকে শুরু হয়ে ভীমগঞ্জ- নারায়ণখোলা-রামভদ্রপুর-পরানগঞ্জ হয়ে ময়মনসিংহ মহানগরের রহমতপুরের সাথে মিলিত হবে নতুন মহাসড়ক। নতুন বিকল্প সড়কে শেরপুর-ময়মনসিংহের দুরত্ব হবে ৪৯ কিলোমিটার। বর্তমানে শেরপুর-ময়মনসিংহ যোগাযোগের প্রধান সড়ক হলো শেরপুর-নকলা-ফুলপুর-ময়মনসিংহ। এই সড়কে দুই জেলার দূরত্ব কিলোমিটার। অর্থাৎ নতুন সড়ক হয়ে গেলে শেরপুর-ময়মনসিংহ দূরত্ব কমবে ২০ কিলোমিটার। 

এত বৃহৎ বাজেটের দৃশ্যমান উন্নয়নের বড় প্রকল্প এই অঞ্চলে এটাই প্রথম। সরকারের এই উদ্যোগ সফল হলে এই অবহেলিত বৃহত্তর অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য বদল হবে বলে মনে করছে স্থানীয়রা। একমাত্র সড়ক যোগাযোগ সর্বস্ব জেলা শেরপুরের সাথে ময়মনসিংহের এই সড়কে বদলে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সীমান্তবর্তী প্রান্তিক এই জেলার সাথে বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহের সাথে দ্রুত যোগাযোগ, অর্থনীতি বাণিজ্যসহ সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষেই এই মহাসড়কটি করা হচ্ছে দাবি সরকারের। সাধারণ মানুষের ধারনা, এই সড়কে যোগাযোগ শুরু হলে উন্নয়নের নতুন দুয়ারের সুচনা হবে।

জানা গেছে, গুরুত্ব ও দূরত্ব বিবেচনায় এই সড়কটি নির্মাণের পথ সৃষ্টি হয় বৃটিশ সরকারের আমলে। তখন শেরপুর থেকে চন্দকোণার চরবসন্তি পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে মহাসড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশে ১৯৫২/৫৩ সালে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়। আর বর্তমান সরকার নতুন ওই যোগাযোগের বাস্তবরূপ দিতে মহাপরিকল্পনা করে বছর চারেক আগে। আর কাজ শুরু হয় গত বছরের ২২ আগষ্ট।

ময়মনসিংহের সাথে যোগাযোগের কাঙ্ক্ষিত এই সড়কটি  কানাশাখোলাস্থ পূর্বের মহাসড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শেরপুরের  গ্রামীণ জনপথ দিয়ে ময়মসিংহের ব্রহ্মপুত্র পাড় রহমতপুরে পৌঁছবে। এই ব্রহ্মপুত্রই সেতু নির্মাণে বড় বাধা ছিল। আর ৩৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহের পরানগঞ্জ-রহমতপুরের ব্রহ্মপুত্র নদ ও রেললাইনের উপর দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে ১৪শ ৭১ মিটারের একটি বিশাল দৃষ্টিনন্দন সেতু। নানা বাধা বিপত্তির মধ্যে কাজ শেষ করতে সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে এই প্রকল্পটি এক হাজার ৪২কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের দায়িত্ব শেরপুর ও ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কাজ সম্পন্ন হতে সময় লাগবে দুই বছরের অধিক। রাস্তার দৈর্ঘ্য হবে ৪৪ দশমিক ৯০৬ কিলোমিটার। প্রস্থ ৩৩ দশমিক ৭৮ ফুট। করতে হবে বড় অন্তত আটটি  ব্রিজ ও শতাধিক ছোট-মাঝারি কালভার্ট। 

সরকারের পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই মহাসড়কটি নির্মাণ হচ্ছে মুলত শেরপুর-ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় অবহেলিত বিশাল চরাঞ্চলকে ঘিরে। এতে পিছিয়ে পড়া চরাঞ্চলবাসীর জীবন জীবিকায় নতুন গতি আনতেই এই বিশাল কর্মযজ্ঞ। এই মহাসড়ককে ঘিরে চরের বুকে স্থাপিত হবে নতুন নতুন ভারি— মাঝারি শিল্প। বাড়বে কর্মসংস্থান ও মাথাপিছু আয়। চরাঞ্চলের বিশাল উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য সহজেই পৌছে যাবে ময়মনসিংহ—ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই মহাসড়ক ঘিরে শেরপুর-কুড়িগ্রাম জেলাসহ বিশাল এই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগসহ জীবন ব্যবস্থায় গতি আসবে।

শেরপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাকিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সরকারের এই প্রকল্পটি  বাস্তবায়ন হলে বিশাল জনগোষ্ঠির ভাগ্য পরিবর্তন হবে। ময়মনসিংহের সাথে দূরত্ব কমে যাওয়ায় বৃহৎ শিল্প হতে পারে। শিক্ষানগরী ময়মনসিংহ কাছে চলে আসায় মানুষজন কম খরচে উচ্চশিক্ষা নিতে পারবে। সরকারের স্থানীয় সড়ক বিভাগ এই মেগা প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করতে বদ্ধপরিকর। সরকারের এই মেগা প্রকল্পকে বাস্তাবায়ন করেতে শেরপুর সড়ক বিভাগ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

novelonlite28
umchltd