ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 

দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপরে, দুর্ভোগে বানভাসিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ১১ জুলাই ২০২৪

শেয়ার

দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপরে, দুর্ভোগে বানভাসিরা

আবারও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি। চারটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের পানি। এতে বেড়েছে দুর্ভোগ। জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে ৯ উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষের। টানা ১০ দিন ধরে পানিবন্দি থাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি খাদ্যসংকটে পড়েছেন চরাঞ্চলের বানভাসি মানুষজন।

তথ্যমতে সন্ধ্যা ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই তিনটি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি তিন ঘণ্টায় এক সেন্টিমিটার করে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জানা গেছে, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ নদীর মধ্যে প্রধান ৪টি নদ-নদীর অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে ১০ দিন ধরে পানিবন্দি জীবন-যাপন করছেন প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ। অনেকের বাড়ি ঘরে পানি থাকায় লোকজন নৌকা ও গলা গাছের ভেলায় বসবাস করছেন। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন অনেক পরিবার। সরকারিভাবে কিছু ত্রাণ সহায়তা পৌঁছলেও বেসরকারিভাবে তেমন ত্রাণ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই ত্রাণ সহায়তা পেলেও রান্না করার সরঞ্জাম না থাকায় শুকনো খাবারের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন অনেকেই। অপরদিকে চারণভূমি তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর তীব্র খাদ্য সংকট। কাঁচা ঘাস ও খড় না থাকায় গবাদিপশু নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাদের।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতীপুরের বাসিন্দা মমেনা জানান, গরু নিয়ে খুব কষ্টে আছি। আমরা এক বেলা খেয়ে থাকতে পারলেও পশু তো আর পারে না। মানুষের পাশাপাশি তাদেরও খুব কষ্ট হচ্ছে। উলিপুরের বেগমগন্জ ইউনিয়নের বালাডোবার চরের আদরী বেগম বলেন, ১০ থেকে ১২ দিন ধরে বানের পানিতে ভাসছি। এখানে নলকূপ তলিয়ে আছে। রান্না করতে পারছি না। শুকনো খাবারও নাই। খুব কষ্টে নৌকায় ও ঘরের উঁচু মাচানে বসবাস করছি। পানি কমার আশায় আছি কিন্তু পানি আবার বাড়তেছে। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ মুর্শেদ বলেন, বন্যা দুর্গত এলাকায় ৮৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ২০ হাজার খাবার স্যালাইন,২০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ৫ হাজার ম্যাট্রো ট্যাবলেট বিতরণের জন্য দেয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, জেলার নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে আবারও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বন্যা পূর্বাভাসের তথ্যানুযায়ী ভারতের উজানে ভারি বৃষ্টিপাত ফলে ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি সমতলে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪২ মেট্রিক টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৩ হাজার ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার ৯ উপজেলায় বিতরণ চলমান।

novelonlite28
umchltd