যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডসের যৌথ অভিযানে ‘হার্টসেন্ডার’ নামে পরিচিত এক পাকিস্তান-ভিত্তিক সাইবার অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই চক্রটি বিশ্বব্যাপী অপরাধীদের কাছে হ্যাকিং টুলস ও প্রতারণামূলক সেবা বিক্রি করত বলে অভিযোগ উঠেছে। 'অপারেশন হার্ট ব্লকার' নামক এই অভিযানে ৩৯টি ডোমেইন ও সংশ্লিষ্ট সার্ভার জব্দ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই ৩০ লাখ ডলারেরও বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সায়েম রাজা নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে এই চক্রটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অনলাইন মার্কেটপ্লেস পরিচালনা করে আসছিল। মাইক্রোসফ্ট ৩৬৫, ইয়াহু, এওএল, ইনটুইট, আইক্লাউড সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের লগইন পেজের নকল করে ফিশিং কিট তৈরি ও বিক্রি ছিল তাদের প্রধান কাজ।
'হার্টসেন্ডার' নামক তাদের স্প্যাম বিতরণ ব্যবস্থা অপরাধীদের সুরক্ষা ফিল্টার এড়িয়ে ব্যাপকভাবে ফিশিং ইমেল পাঠানোর সুবিধা দিত।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের মতে, রাজা কেবল হ্যাকিং টুলস বিক্রিই করেননি, অপরাধীদের এগুলি ব্যবহারের প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। ইউটিউবে প্রশিক্ষণমূলক ভিডিও প্রদান করে ফিশিং কৌশল ও সনাক্তকরণ এড়ানোর পদ্ধতি শিখাতেন। ‘দ্য ম্যানিপুলেটরস’ নামক এই দলটি ফুডটুলস, ফুডপেজ, ফুডসেন্ডার, ফুডকো সহ বিভিন্ন নামে সাইবার সুরক্ষা সনাক্তকরণ এড়ানোর জন্য ডিজাইন করা টুলস বিক্রি করত।
এই অভিযানে নেদারল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে যেখানে ব্যক্তিরা তাদের ইমেল তথ্য চুরি হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে পারবেন। 'অপারেশন ট্যালেন্ট' নামক একটি সমান্তরাল তদন্তে স্পেনে দুই জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং Cracked.io, Cracked.to, Nulled.to সহ সাইবার অপরাধ প্ল্যাটফর্মের সাথে জড়িত ১৭টি সার্ভার এবং ১২টি ডোমেইন জব্দ করা হয়েছে।
রাজা পূর্বে সংস্কারের দাবি করেছিলেন এবং সাংবাদিক ব্রায়ান ক্রেবসের কাছে তার কার্যক্রম সংক্রান্ত পুরানো প্রতিবেদন অপসারণের আবেদন করেছিলেন, দাবি করে যে তিনি পাকিস্তান ছেড়ে গেছেন। তবে এই দাবির সত্যতা এখনও অনিশ্চিত।
আরও পড়ুন: