
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক নতুন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পল কাপুর। তিনি ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ পল কাপুরকে এ পদে মনোনয়ন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি পাকিস্তানের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। পল কাপুরকে মনোনয়নের বিষয়টি এমন সময় প্রকাশিত হলো যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ট্রাম্পের এই মনোনয়ন পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে মার্কিন ভবিষ্যত নেতিবাচক নীতির ইঙ্গিত দেয়।
বুধবার হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে সিনেটে পল কাপুরের নাম পাঠানো হয়। সিনেটের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর তিনি ওই পদে যোগ দেবেন। ডোনাল্ড লুর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৭ জানুয়ারি।
পল কাপুরের দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও পারমাণবিক নীতি বিষয়ে বিস্তৃত গবেষণা রয়েছে। বর্তমানে তিনি ইউএস নেভাল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০-২০২১ সালে পল কাপুর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের পলিসি প্ল্যানিং বিভাগে কাজ করেছেন। যেখানে ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা ও যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক বিষয়ক কৌশল প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের দেখভাল করে থাকে। পল কাপুর সেই দায়িত্বই পালন করবেন।
পল কাপুর এই অঞ্চলের নিরাপত্তা বিশ্লেষণ নিয়ে কয়েক দশক ধরে কাজ করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপকভাবে লিখেছেন। বিশেষ করে পাকিস্তান কীভাবে জিহাদি জঙ্গিবাদদের ব্যবহার করে তা নিয়ে লিখেছেন।
তিনি যেসব বই লিখেছেন তার মধ্যে রয়েছে– ‘জিহাদ অ্যাজ গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড দ্য পাকিস্তানি স্টেট’, ‘ডেঞ্জারাস ডিটারেন্ট: নিউক্লিয়ার উইপন্স প্রলিফারেশন অ্যান্ড কনফ্লিক্ট ইন সাউথ এশিয়া।
এ ছাড়া পল কাপুর সহলেখক হিসেবে লিখেছেন ‘ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড দ্য বোম্ব: ডিবেটিং নিউক্লিয়ার স্ট্যাবিলিটি ইন সাউথ এশিয়া’।
‘জিহাদ অ্যাজ গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড দ্য পাকিস্তানি স্টেট’- বইয়ে পল কাপুর তুলে ধরেছেন যে, ভারতকে প্রতিহত করতে ও আফগানিস্তানে প্রভাব বজায় রাখার উপায় হিসেবে পাকিস্তান কীভাবে সক্রিয়ভাবে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো লালন-পালন করেছে।
এ ছাড়া পল কাপুর তার গবেষণায় স্পষ্ট করেছেন, এসব জিহাদি গোষ্ঠীগুলো থেকে পাকিস্তান প্রাথমিকভাবে সুবিধা পেলেও পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পল কাপুর আরও উল্লেখ করেছেন, পাকিস্তান প্রায়ই নিজেকে সন্ত্রাসবাদের শিকার হিসেবে উপস্থাপন করলেও, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের মতো গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
আরও পড়ুন: