সেই জুলানির অবিশ্বাস্য উত্থান
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত : ০৬:২৯ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার
সিরিয়ায় ক্ষমতার পালাবদল। দুই যুগের শাসন অবসান ঘটিয়ে রোববার (৮ ডিসেম্বর) দেশত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। বিদ্রোহীদের দখলে এখন সিরিয়া। আর এই নাটকীয় পতনের নেপথ্যে রয়েছেন আবু মুহাম্মদ আল-জুলানি। তার নেতৃত্বাধীন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বাহিনী মাত্র ১২ দিনের ঝটিকা অভিযানে সিরিয়ার একাধিক প্রদেশ ও রাজধানী দামেস্ক দখল করে নেয়। অথচ একসময় এই জুলানির মাথার দাম ধার্য করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ১২০ কোটি টাকা (১০ মিলিয়ন ডলার)।
১৯৮২ সালে সৌদি আরবে জন্মগ্রহণ করেন জুলানি। পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার বাবার সঙ্গে শৈশব কাটে রিয়াদে। ১৯৮৯ সালে পরিবারের সঙ্গে সিরিয়ায় ফিরে আসেন। ২০০৩ সালে আল-কায়েদায় যোগ দিয়ে ইরাকে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। এমনকি মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দিও হন। পরে সিরিয়ায় ফিরে আসেন।
২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হলে আল-কায়েদার অধীনে জাবাত আল-নুসরা নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। পরে এই সংগঠনটি হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামে পরিচিতি পায়। একপর্যায়ে আইএসআইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির সঙ্গেও কাজ করেন তিনি। তবে সংগঠনের নেতৃত্ব দখলের চেষ্টা করলে ২০১৩ সালে বাগদাদির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এমনকি তার বিরুদ্ধেও লড়াই করেন।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র জুলানির মাথার দাম ১০ মিলিয়ন ডলার (বর্তমানে প্রায় ১২০ কোটি টাকা) ঘোষণা করে। তাকে এবং তার বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসেবেও তালিকাভুক্ত করে। জুলানি পরে দাবি করেন, তিনি নিরীহ মানুষ হত্যা সমর্থন করেন না। সিরিয়ায় একটি স্থিতিশীল শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই তার লক্ষ্য।
গত নভেম্বরের শেষ দিকে হঠাৎই জোরদার অভিযান শুরু করে জুলানির এইচটিএস। প্রথমে আলেপ্পো দখল করে। এরপর কোনো বড় প্রতিরোধ ছাড়াই একাধিক প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করে।
এই মুহূর্তে বিদ্রোহীদের সর্বোচ্চ নেতা জুলানি। তবে তিনিই দেশ পরিচালনা করবেন কি না, বা দেশ পরিচালনায় তার কতটুকু দক্ষতা রয়েছে, সেগুলোই এখন আলোচনায়। এর আগে এইচটিএস বিদ্রোহী-শাসিত এলাকাগুলোতে কর আদায়, পরিচয়পত্র প্রদান এবং সীমিত জনসেবা চালু করেছিল। জাতীয় পর্যায়ে তারা কী করতে পারে, সবাই সেটি দেখার অপেক্ষায়।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস ও টাইমস অব ইসরায়েল