বাবাকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, মেয়েকে কলেজ থেকে বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ১০:০৩ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০২৩ রোববার

চাঁদপুরে মনির হোসেন খান (৭৫) নামে বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেয়ে ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতে চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোডস্থ কলমতর খান বাড়ি থেকে নির্যাতনকারী মেয়ে ফাতেমাকে আটক করে পুলিশ। ফাতেমা আক্তার চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের মাস্টার রোলের একজন কর্মচারী এবং ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট পদে কর্মরত। শহরের কলমতর খান বাড়ির বৃদ্ধ মনির হোসেনের তিন মেয়ের মধ্যে একজন ফাতেমা। মনির হোসেনের কোনো ছেলে নেই।

এর আগে গত ৬ অক্টোবর (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি প্রতিবেশী কেউ একজন ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, গোসল করাতে নিয়ে বাবা মনির হোসেনকে মারধর করছেন তার মেয়ে ফাতেমা। অসহায় বাবা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন। কখনও চাপকল চেপে পানি তোলার চেষ্টা করছেন।

চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুসহীন আলম বলেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে বাবাকে নির্যাতনের জন্য পুলিশ তার মেয়েকে আটক করে। সকালে তার বাবা থানায় এসেছে। তবে তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি সন্তানের ওপর কোনো অভিযোগ না রেখে ক্ষমা করে দেন। তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন।

বাবার অনুরোধে এবং তার চাওয়াকে সম্মান করে মেয়ে ফাতেমা আক্তার শিল্পীর কাছ থেকে অঙ্গিকার নেয় হয়। যাতে আগামীতে সে তার বাবার ওপর কোনো প্রকার নির্যাতন না করে। পরে পুলিশ ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে তার বয়বৃদ্ধ বাবা মনির হোসেন খান ও মাতা রোকেয়া বেগমের জিম্মায় দেওয়া হয়। রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত ফাতেমা আক্তার চাঁদপুর সদর মডেল থানা হেফাজতেই ছিল।

এদিকে বাবাকে মারধর ও ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে ফাতেমার কর্মস্থল চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায় ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে অনেকেই অত্র কলেজের শিক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। মূলত তিনি মাস্টার রোলের একজন কর্মচারী এবং ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট পদে কর্মরত। তিনি কলেজের শিক্ষা সংক্রান্ত কোনো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ভিডিওটিতে প্রচারিত ঘটনাটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়। বিষয়টি বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়াধীন। এমতাবস্থায় কলেজ প্রশাসন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তারপরও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অধিকতর অবগতির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত  কমিটি গঠন করেছে। কমিটির তদরে ভিত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।