রাফি’র কারণেই কলকাতায় ব্যর্থ হলেন শাকিব!

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত : ০৬:৪৭ পিএম, ৮ জুলাই ২০২৪ সোমবার | আপডেট: ০৬:৫৩ পিএম, ৮ জুলাই ২০২৪ সোমবার

চলচ্চিত্র বোদ্ধারা সব সময় বলে থাকেন - একটি চলচ্চিত্রের ভিত্তি তার গল্প। মৌলিক গল্পের চলচ্চিত্র দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে আসার নেপথ্যে সব চাইতে বড় ভূমিকা রাখে। এই ঈদে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া শাকিব খান অভিনীত ‘তুফান’ ছবিতে গল্পের বড় অভাব চোখে পড়েছে। এটি মুক্তির আগে থেকেই নানান অভিযোগে অভিযুক্ত। মূলত শক্ত কোনো মৌলিক গল্প না থাকাতেই ছবিটি কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে মুখ থুবড়ে পড়লো। অর্থাৎ দর্শক শূন্যতার প্রভাবে তুফান ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে চরম ব্যর্থ হয়েছে। আর এতে করে নির্মাতা রায়হান রাফি'র হাত ধরে কলকাতায় নতুন করে আবারও ধরা খেলেন বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের সুপারস্টার শাকিব খান।

তুফান ছবিটি নিয়ে প্রধানতম অভিযোগ ছিল - অনেকগুলো ভারতীয় ছবির গল্প জোড়াতালি দিয়ে এটির কাহিনী তৈরি করা হয়েছে। ছবিটি মুক্তির পর থেকে সিনেপ্লেক্সে কিছু দর্শক হলেও সিঙ্গেল স্ক্রিনে ছিল দর্শকশূন্যতা। এরপর আমেরিকা - কানাডাসহ আরও কয়েকটি দেশে মুক্তি পেলে সেখানেও দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়। এরপর গেলো ৫ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় শাকিবের তুফান। নির্মাতা রায়হান রাফি সেখানে মুক্তির আগে ও পরে অনেক হাঁকডাঁক দিলেও শাকিবের বাজার যে এখনো কলকাতায় তৈরি হয়নি, সেটা আবারও স্পষ্ট করলো সেখানকার সিনেমা হলগুলোর দর্শকশূণ্যতা। অর্থাৎ তুফান কলকাতায় খুবই বাজেভাবে  ফ্লপ করেছে। 

কলকাতায় চল্লিশটির মতো সিনেমা হল নিয়ে মুক্তি দিলেও দর্শকখরার শাকিবের এই ছবি নিয়ে ওখানকার দর্শকরা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। সেখানে মোটেও চলছে না ছবিটি। 

তুফান ফ্লপ করার বিষয়ে কলকাতা থেকে এক সাংবাদিক বলেন, শাকিবের তুফান কলকাতাতে একবারেই চলছে না। আর চলবেই বা কেনো! এই গল্পের ছবি তো আমাদের দর্শক আগেই দেখেছে। অনেক ছবির গল্প নিয়ে একটা জগাখিঁচুড়ি বানানো হয়েছে। কলকাতার স্মার্ট দর্শক অনেক এগিয়ে আছে। তারা অনেক আগেই এসব দেখে ফেলেছে। তাছাড়া শাকিবের বাজার নেই কলকাতায়। শাকিবের ছবি ওখানকার দর্শক দেখতে চায় না। এর আগেও শাকিবের অন্য ছবিগুলো কলকাতায় মুক্তি দিলেও সেগুলো সেভাবে চলেনি। এবারও বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি সেখানে দর্শক একেবারেই নেই।

কলকাতায় খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, বাংলাদেশে তুফান সংশ্লিষ্টরা অনেক ফাঁকা আওয়াজ তুললেও কলকাতায় তারা পুরোটাই ব্যর্থ। প্রথম দুইদিন সিনেমা হল ফাঁকা। আমাদের দর্শকরা এখন প্রভাসের ‘কল্কি’ নিয়েই ব্যস্ত। পরের সপ্তাহেও আসছে হিন্দি ছবি। সুতরাং আগামী সপ্তাহে যে তুফান একেবারেই বিলীন হয়ে যাবে, সেটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে তাছাড়া এই তুফানে শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেছেন আমাদের (কলকাতা) মিমি চক্রবর্তী, নিজের দেশেই তার কোনো বাজার নেই।

এদিকে কলকাতা শহরে তুফান পোস্টারে ছেয়ে গেছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ার একটি মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন ছবিটির ঢাকার প্রযোজনা কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে কলকাতার একটি সূত্র বলছে -  তুফানের পোস্টার কোথাও নেই। এক দুই জায়গায় কয়েকটি পোস্টার রয়েছে। এটা দিয়েতো গোটা কলকাতা বোঝায় না। আর কলকাতা থেকে অনেকেই জানিয়েছেন, তুফান মূলত সেখানকার প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ’র ছবি। আইনি জটিলতা এড়াতে ও ঢাকার বাজার ধরতে বাংলাদেশী প্রযোজনা সংস্থার নাম দিয়ে এটা বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  

এদিকে জানা গেছে, কলকাতায় ব্যর্থ হয়ে বিষণ্ন মনে শনিবার দুপুরের ফ্লাইটে বাংলাদেশে ফিরেছেন শাকিব খান। এই ছবির প্রচারণায় সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। আশা করেছিলেন, কলকাতার এবার কিছু একটা করে দেখাবেন। কিন্তু তার সে ইচ্ছা আর পূরণ হলো না। যথারীতি কলকাতায় ফ্লপ মারলেন বাংলাদেশী ছবির সুপারস্টার। এক্ষেত্রে তার এই ফ্লপের জন্যে কলকাতার লোকজন নির্মাতা রায়হান রাফিকেই দায়ী করছেন।

সেখানকার চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের একটি সূত্র বলেছে - কলকাতায় এতো সুপারস্টার থাকতে শাকিব গিয়েই সেখানকার বাজার দখল করে নেবেন, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। অনেক সময় এমনও হয়েছে, মৌলিক গল্পের ছবি হলে দর্শক তা দেখেন। কিন্তু তুফান এর গল্প নিয়েও রয়েছে নকলের অভিযোগ। তাহলে ব্যর্থ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সবচেয়ে বড় কথা, এই ধরনের গল্প এখানকার দর্শকরা আগেই দেখে ফেলেছেন। তাই তুফান দেখার প্রশ্নই ওঠে না তাদের।