কোটাবিরোধী আন্দোলনে স্থবির ঢাকা, জনদুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ০৪:৪১ পিএম, ১০ জুলাই ২০২৪ বুধবার

সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সারাদেশে চালিয়ে যাচ্ছেন এ কর্মসূচি।

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই।

এদিকে, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর একমাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্রটি বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন জানান, আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন। ফলে যা ছিল, তা-ই থাকবে। অর্থাৎ, কোটা বাতিল নিয়ে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল থাকছে।

কোটা নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতিবস্থার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেন, প্রতিবাদকারীরা চাইলে আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে ভিসিদেরও উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর ঢাকা। দুপুর ১২টার দিকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যাতায়াত ব্যবস্থা। বাসসহ অন্য যানবাহন প্রধান সড়কগুলোয় আটকা পড়েছে। নগরজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। অনেকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দিচ্ছেন। মোড়ে মোড়ে আন্দোলনকারীর বেরিকেট দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও সাংবাদিকদের গাড়ি তারা ছেড়ে দিচ্ছে।

‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পূর্বনির্ধারিত স্থানে, এমনকি মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সড়কে ব্যারিকেড প্রস্তুত রেখেছে পুলিশ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ সদস্যরা।

এ বিষয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, সকাল থেকে সতর্ক পুলিশ। মানুষ ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কেউ যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সেজন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া আছে।