কর্মকর্তারা ফুটবল উন্নয়নের কথা বললেও ফুটবলাররা মাঠের লড়াইয়ে বারবার হতাশ করেছেন। বারবার বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন বলে আসছিলেন আমি তো সবই করে দিচ্ছি। কিন্তু মাঠে নেমে খেলে দিতে পারব না। জাতীয় দলের ফুটবলাররা ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে সালাহউদ্দিনের সময়। কিন্তু জাতীয় দল বারবার হতাশা ছাড়া কিছুই দিতে পারেননি দেশকে। ফুটবলাররা দেশের ফুটবল নিয়ে ভাবেন কি না জানা নেই।
তবে নারী ফুটবলাররা এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গিয়ে বারবার দেশের কথা তুলে এনেছেন। দেশের জন্য কীভাবে খেলতে হবে, কীভাবে চ্যাম্পিয়ন হতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন তারা। যেখানে বারবার ব্যর্থ হয়েছে পুরুষ ফুটবল দল। সবার চোখ ছিল বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, সিনিয়র সহ-সভাপতি কিংস অ্যারেনার ঘরের ছেলে ইমরুল হাসান, সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, ফাহাদ করিম, সাব্বির আহমেদ আরেফ, সদস্য ছাইদ হাসান কাননসহ বাফুফের নতুন কমিটির অনেকেই বাড়তি উৎসাহ নিয়ে এসেছিলেন। দলকে প্রেরণা দিলেন।
কিন্তু তপু বর্মণ, রাকিব, মোরসালিন, ফাহিম, ইসা ফয়সাল, সাদ উদ্দিনরা হতাশায় ডুবিয়েছেন। গতকাল রাতে বসুন্ধরা কিংসের মাঠে মালদ্বীপের কাছে লজ্জার হার হেরে দেশের ফুটবলকে আরও একবার হতাশায় ডুবিয়েছেন। ফাসির আলীর একমাত্র গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। ১৮ মিনিটে গোল করেন। লজ্জার হারের কথাটা বলার কারণ আছে, মালদ্বীপ এবারই প্রথম বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে হারাল। তারা বলছে, তাদের ইতিহাসে এটা ঐতিহাসিক জয়।
মালদ্বীপ কোচ সুজাইন আলী বলেন, 'এটা আমাদের ইতিহাসের সেরা জয়। ঐতিহাসিক জয়। এই জয় মালদ্বীপের ফুটবলের জন্য অনেক বড় গৌরবের।' সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথাও যেন লজ্জায় ডোবাচ্ছিল। লজ্জায় ফেলছিল। কারণ, মালদ্বীপ গত এক বছর ধরে কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলেনি। খেলেনি তাদের ঘরোয়া ফুটবল লিগ। মালদ্বীপ শেষবার আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে, ঢাকায় বসুন্ধরা কিংসের মাঠেই। সেই ম্যাচ ছিল ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ফিরতি ম্যাচ। বাংলাদেশ ২-১ গোলে হারিয়েছিল মালদ্বীপকে। সেই হারের প্রতিশোধ নিয়েছে এক বছর পর।
এর মধ্যে মালদ্বীপ আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারেনি। ফিফার সঙ্গে তাদের ফেডারেশনে ঝামেলা ছিল। আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলা একটা দল কীভাবে নিয়মিত খেলা দলটাকে হারিয়ে দিল তা নিজের চোখকেও বিশ্বাস করানো যায় না। মালদ্বীপের ফুটবলারদের খেলা সেরকম ঝাঁঝ ছিল না। এক বছর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামলে জড়তা থাকে। সেটা স্পষ্ট ফুটেছে তাদের খেলায়। গোলরক্ষক থেকে শুরু করে স্ট্রাইকিং পজিশন পর্যন্ত, সবখানে জড়তা। তার পরও সেই সুযোগ নিতে পারেনি বাংলার ফুটবলাররা। মালদ্বীপের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ফাসির আলী। এই ফুটবলার আগেও বাংলাদেশের বিপক্ষে গোল করেছেন।
১৮ মিনিটে গোলের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ভালোই খেলছিল। কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিল না। মালদ্বীপ কৌশল বেছে নিলো। প্রতিপক্ষের মাঠে সবকিছু বুঝে উঠতে একটু সময় নিয়ে একটা সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটা গোল আদায় করে নেয়। কিন্তু ম্যাচে ফেরার মতো তখনো ৭২ মিনিট রয়ে গেছে। কিন্তু এই সময়ে বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা তার ছেলেদের খেলিয়ে নিতে পারেননি। ৬৫ মিনিটে একসঙ্গে তিন জন ফুটবলার নামান। তাতে শুরুতে খুব একটা লাভ না হলেও মালদ্বীপ ফুটবলাররা যখন ম্যাচ ঠেকানোর জন রক্ষণে চলে আসেন সেই সুযোগে মোরসালিন রাকিবরা সুযোগ পেয়েও গোল আদায় করে নিতে পারেননি। মালদ্বীপের গোলরক্ষক শরিফ খুব সহজেই কয়েকটি সেভ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: