ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ 

রোহিতের বিদায়ে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে স্বস্তি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:৩৫, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

শেয়ার

রোহিতের বিদায়ে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে স্বস্তি

পেসারদের মার খেতে দেখেই কিনা অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স পাওয়ারপ্লেতেই নিয়ে আসলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। এই স্পিনারের করা দ্বিতীয় ওভারে চড়াও হয়েছিলেন রোহিত। পরপর দুই বলে চার ও ছক্কা মারার পর আরেকটি বাউন্ডারি হাকাতে গিয়েই ধরা পড়েন হিটম্যান।

ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন, এবার যেদিকে খেলতে চেয়েছিলেন রোহিত, সেটি করতে পারেননি। ক্যাচ উঠেছিল কাভারে। পেছন দিকে ছুটে ট্রাভিস হেড নিয়েছেন দুর্দান্ত ক্যাচ। রোহিত থেমেছেন ৩১ বলে ৪৭ রান করে। ১০ ওভারে ভারত ২ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৮২ রান।

শুভমান গিলের বিদায়ের পর রোহিত শর্মার সঙ্গে দলের হাল ধরেছেন বিরাট কোহলি। এসেই আক্রমণ শুরু করছেন কোহলি। সপ্তম ওভারে স্টার্কের বলে হাঁকিয়েছেন টানা তিন চার। অন্যপ্রান্তে ঝড় তুলে কোহলিস শো দেখছেন রোহিত।তাতে ভারতও পেরিয়েছে দলীয় পঞ্চাশের ঘর।

আসরজুড়ে ভালো খেলে ফাইনালে এসে খেই হারালেন শুভমান গিল। শুরুতেই বিদায় নিয়েছেন তিনি। স্টার্কের শর্ট লেংথের বলে যেভাবে চেয়েছিলেন খেলতে পারেননি সেভাবে, লেংথও ঠিক সে শট খেলার পক্ষে ছিল না। গিলের পুলে সরাসরি ক্যাচ গেছে মিড অনে থাকা অ্যাডাম জাম্পার হাতে।

প্রথম ওভার দেখেশুনে খেলে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই চড়াও হয়েছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। জশ হ্যাজেলউডের ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রোহিতকে স্ট্রাইক দিয়েছিলেন শুভমান গিল।টানা দুই চারে হ্যাজেলউডকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতীয় ওপেনার।

আগের ম্যাচে জয়ের ধারাবাহিকতায় এই ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে ভারত। ছয় ব্যাটসম্যানের সঙ্গে তিন জেনুইন পেসার ও দুই স্পিনার আছেন সেরা এগারোতে।

ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, কেএল রাহুল (উইকেটরক্ষক), সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, জসপ্রিত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব ও মোহাম্মদ সিরাজ।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার একাদশেও কোনো পরিববর্তন আসেনি। তাতে সাত ব্যাটসম্যানের সঙ্গে তিন পেসার ও এক স্পিনার নিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, ট্র্যাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, মারনাস লাবুসচেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জোশ ইঙ্গলিস (উইকেটরক্ষক), মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যাডাম জাম্পা ও জশ হ্যাজলেউড।

তবে ট্রফির স্বপ্নে বিভোর থাকা গোটা দেশের আঁচ যে গায়ে লাগছে, সেটা স্বীকার করলেন রোহিত। তাতে ভালো কিছু উপহার দিতে চান, ‘ইমোশনালি, অবশ্যই এটা বড় ব্যাপার, বড় উপলক্ষ্য। কোনো সংশয় নেই। যতটা কঠোর পরিশ্রম, যত স্বপ্ন, সব এই দিনকে ঘিরেই। কালকে সেই দিনটি আমাদের সামনে আসছে। তবে পেশাদার অ্যাথলেটদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জই তো এটা যে, কীভাবে সবকিছু এক পাশে সরিয়ে মূল কাজে মনোযোগ দিতে পারে। আমার সঙ্গে আরও ১০ ক্রিকেটার কাল তাই মাঠে নামবে নিজেদের কাজে মন দিতে, জীবনের সেরা মুহূর্ত হিসেবে তারা ভাববে না।’

কিন্তু ফাইনালের দলটা অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালের মঞ্চে এলেই যাদের ক্রিকেটীয় ঐতিহ্য ঠিকরে বেরোয়। একবার জয়ের স্রোতে পড়ে গেলে সমুদ্র দখল না করে যে জোয়ার থামে না। গ্রুপ পর্বে সেটাই দেখালো প্যাট কামিন্সের দল। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারা। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের চিরায়ত রক্ত প্রবাহিত হয় তাদের শিরায়। কামিন্স সেটাই আওড়ে গেলেন, ‘দর্শক সমর্থন অবশ্যই ভীষণ রকমের একতরফা থাকবে। বিশাল সংখ্যক দর্শককে চুপ করিয়ে দিতে পারার চেয়ে তৃপ্তিদায়ক কিছু খেলাধুলায় আর নেই!’

পরিসংখ্যানের লড়াইয়ে জয়ের পাল্লা হেলে পড়ে আসরের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার দিকে। একদিনের ম্যাচে দুই দল একে অন্যকে মোকাবেলা করেছে ১৫০বার। তাতে অজিদের ৮৩ জয়ের বিপরীতে ভারত জিতেছে ৫৭টিতে। বাকি ১০ ম্যাচে ফল হয়নি।

আবার এই ৫৭ জয়ের মধ্যে ৩৩ ম্যাচে ঘরের মাঠে জয় পেয়েছে ভারত। প্রতিপক্ষের মাঠে ১৪ ও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ১০ জয় আছে রোহিত শর্মার দলের। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মাটিতে জিতেছে ৩৮ ম্যাচ। ভারতের মাটিতে ৩৩ ম্যাচ জয়ের বিপরীতে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে জিতেছে ১২ ম্যাচ।

বিশ্বকাপে লড়াইয়ের হিসেব আসলেও এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। তাতে অস্ট্রেলিয়ার ৮ জয়ের বিপরীতে ভারতের জয় ৫টিতে।তবে শেষ দুটি ম্যাচ কথা বলছে ভারতের পক্ষে। ২০১৯ সালে ও চলতি আসরের গ্রুপ পর্বে অজিদের হারিয়েছে ভারত।
 

novelonlite28
umchltd